পোস্ট অফিসে ই কমার্স পন্য ডেলিভারী শুরু
Published : জানুয়ারি ৩, ২০১৭ | 2368 Views

বর্তমানে দেশে ডাকঘর প্রায় দশ হাজার। সঞ্চয়পত্র, সরকারি চিঠি, অর্থ লেনদেনসহ বেশকিছু সেবা মিলছে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে। তাই ডাক বিভাগকে অনলাইন ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে বাড়ানো হয়েছে গাড়ি ও লোকবল, নেয়া হচ্ছে সংস্কারের উদ্যোগ।
২৯ ডিসেম্বর সকালে ই-কমার্স সেবার উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী। এখন থেকে ডাকবিভাগের অবকাঠামো ব্যবহার করে পণ্য সরবরাহ করতে পারবেন গ্রাহকরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রাহকের কাছে দ্রুত পণ্য পৌঁছাতে পারলে জনপ্রিয় হবে এ সেবা।
নতুন নতুন সেবার মাধ্যমে সারাদেশে ডাকঘর ঢেলে সাজানোর কথা বললেন টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। গেল অর্থবছরে ডাকবিভাগের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩০১ কোটি টাকা। চলতি বছর তা আরো বাড়ানোর লক্ষ্য তাদের।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ হবে বাংলাদেশের ই-কমার্সের কেন্দ্রস্থল। গতকাল রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সভা কক্ষে ই-কমার্স পণ্যের সরবরাহ সেবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল প্রবাস চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সরবরাহ সেবার উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) সুধাংশু শেখর ভদ্র, কেন্দ্রীয় সার্কেলের পোস্ট মাস্টার জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহবুব রশিদ, ই-ক্যাব সভাপতি রাজিব আহমেদ এবং ই-ক্যাব উপদেষ্টা শমী কায়সারসহ আরো অনেকে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারানা হালিম বলেন, কয়েক মাস আগে আমি বলেছিলাম ডাক বিভাগ হবে বাংলাদেশের ই-কমার্স হাব। সে লক্ষ্যে প্রথম ধাপ সম্পন্ন হলো। আমাদের ৯ হাজার ৮৮৬টি ডাকঘর প্রস্তুত আছে সব রকমের সেবা নিয়ে। তিনি জানান, জানুয়ারিতে ১৮টি গাড়ি রাস্তায় নামবে। পর্যায়ক্রমে আরো গাড়ি সরবরাহ সেবার জন্য আনা হবে। এসব গাড়ির ২০ শতাংশ চালক হবে নারী। ই-কমার্স নারী ক্ষমতায়নে সাহায্য করবে এবং মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য কমাবে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল প্রবাস চন্দ্র সাহা তার বক্তব্যে বলেন, আজ থেকে দেড় বছর আগে ই-কমার্সের সঙ্গে আমরা কাজ শুরু করি। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজকের এই দিনে আমরা উপস্থিত হয়েছি। তিনি আরো বলেন, ডাক বিভাগ ২০১০ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মোবাইল মানি অর্ডার সেবা শুরু করে। ই-কমার্স ডেলিভারি সেবার জন্য ঢাকার ১১ পোস্ট অফিসের কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
ই-ক্যাব উপদেষ্টা শমী কায়সার বলেন, নারী ক্ষমতায়নকে সামনে রেখে আমি ই-কমার্সে যুক্ত হয়েছি। ডাক বিভাগের এই সরবরাহ সেবা তৃণমূল পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। কেননা ডাক বিভাগের নয় হাজারের বেশি পোস্ট অফিস দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। আমাদের পণ্য ও সেবার ভিন্নতা অনেক, তাই একসময় আমাদের এখানে আলিবাবা, অ্যামাজনের চেয়ে বড় কিছু হবে।
ই-ক্যাব সভাপতি রাজিব আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিদিন ২০ হাজার সরবরাহ প্রসেস করা হয়। অন্যদিকে চীন প্রতিদিন ছয় কোটি সরবরাহ প্রসেস করে। আমরা আশা করি, অচিরেই প্রতিদিন এক লাখ পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে সেলফোন বা কম্পিউটার নয় বরং সবার কাছে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেয়া।
তবে অনেকে মনে করেন সেবাগুলোকে আরো উন্নত করা দরকার। সেটা করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তথ্য প্রযুক্তির যুগে সেই সক্ষমতার অনেকটাই ডাক বিভাগের রয়েছে। আপাতত কোন ডিজিটাল কোডিং বা ই কমার্স পন্যগুলোর জন্য প্যাকে একটি নির্দিষ্ট সাইন থাকা উচিত।
Published : জানুয়ারি ৩, ২০১৭ | 2368 Views